KHONDKER SHAMS UDDIN SMRITY HIGH SCHOOL
  ||  

যার স্বরনে এই বিদ্যালয়

খন্দকার শামস্ উদ্দিন আহাম্মাদ

গোপীনাথপুর গ্রামে উত্তর পাড়া খন্দকার বাড়িতে ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর জন্ম। পিতা খন্দকার আহাম্মাদ উদ্দিন ছিলেন ছয় ভ্রাতার তৃতীয়। মাতা গোপালগঞ্জ জেলার বাহারা গ্রামের তদানিন্তন প্রতাপশালী জমিদার মুনসী আহাম্মাদ কামেল মিয়ার মেয়ে ছৈয়াদুন‌্নেছা খাতুন। তের বৎসর বয়সে তিনি পিতৃহারা হন এবং যৌথ সংসারে মেঝ চাচার সাথে থেকে লেখাপড়া করে সুনামের সাথে বি এ এবং আইন বিষয়ে বি এল ডিগ্রি লাভ করেন। তদানিন্তন ফরিদপুর জেলা শহরে এবং ১৯২৫ সালের পর নতুন মহকুমা শহর গোপালগঞ্জে আইন-পেশায় নিয়জিত থাকেন। সেই সময় দরিদ্র হিন্দু-মুসলমানদের ছিলো চরম দুরবস্থা। তিনি তাঁদের নেতৃত্ব দিয়ে জমিদার ও মহাজনদের অত্যাচার হতে রক্ষা করে অল্প সময়ে সুনাম ও প্রতিপত্তি অর্জন করেন যার ফলে তিনি একাধিকক্রমে ত্রিশ বৎসর ফরিদপুর জেলা বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হন এবং পাঁচ বৎসর ফরিদপুর জেলা স্কুল বোর্ডের নির্বাচিত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময়ে ভাল পানির অভাবে কলেরা রোগে প্রতিবৎসর বহুলোক প্রাণ হারাত, তাই তিনি গ্রামে গ্রামে সুপেয় পানির জন্যে টিউব-ওয়েল বসিয়ে দেন যা এখনও মানুষের ব্যবহারে রয়েছে। অশিক্ষিত মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো জ্বালাতে তিনি দূর-দূরান্তে অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। ফরিদপুর জেলা বোর্ডে কার্যকালে তিনি এলাকার রাস্তাঘাট ও নদী-খাল-বিলের উন্নয়ন সাধন করেন। ১৯৩৬ সালে তিনি বৃটিশ বেংগল প্রদেশের লেজিসলেটিভ এসেম্বিলি (আইন প্রনয়ন পরিষদ) এর 'মেম্বার' নির্বাচিত হন এবং ১৯৪৬ সালে পুনরায় ঐ পদে নির্বাচিত হয়ে একটানা ১৮ বৎসর দায়িত্ব পালন করায় তিনি "এম, এল, এ" সাহেব নামেই সুপরিচিত ছিলেন। গোপালগঞ্জ শহরের সব স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির ও জনকল্যাণ মূলক সকল সংস্থার সাথে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন যার ফলে তিনি সব সময়ই কর্মব্যস্থ থাকতেন। ১৯৬৫ সালের শেষের দিকে তাঁর দৃষ্টি শক্তি ক্ষীন হয়ে গেলেও আগের মতই কর্মব্যস্ত জীবন যাপন করতেন। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে হটাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় তাকে চিকিৎসার জন্যে গোপালগঞ্জ থেকে সস্ত্রীক ঢাকায় তাঁর বড় ছেলের পুরানা পল্টন স্থিত বাড়িতে নেয়া হয়। সে বাড়িতেই ১৯৮১ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারী তিনি এনতেকাল করেন। ঢাকার বনানী কবরস্থানে তিনি চির নিদ্রায় শায়িত আছেন। মৃত্যুকালে তিনি এক মেয়ে বেগম লুৎফুন্নেছা এবং পাঁচ পুত্র খন্দকার মাহবুবুদ্দিন আহম্মাদ, খন্দকার আবু আহম্মাদ কামরুদ্দিন, খন্দকার আবু আহম্মাদ মাহতাবউদ্দিন খন্দকার আবু মোহাম্মদ আশরাফউদ্দিন এবং খন্দকার আবু মোহাম্মদ মোহসেনউদ্দিন এবং তাঁর অসংখ্য গুণগ্রাহী ও শুভানূধ্যায়ী রেখে যান।

 LOCATION